Class 6 Agriculture Assignment Answer 6th Week
কৃষি এসাইনমেন্ট ক্লাস ৬ (ষষ্ঠ সপ্তাহ)
বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের জীবনে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা কৃষি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর প্রায় সকল উপকরণ উৎপাদন ও সরবরাহ করে। এছাড়া অন্যান্য পণ্য ও সেবা ক্রয় এর অর্থও কৃষি যোগান দেয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য খাতের চাহিদাগুলো পূরণে আমাদের জীবনে কৃষি ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
১। রিনা বেগম কৃষি মেলায় যেসব কৃষিজাত পণ্য দেখতে পেয়েছিলেনঃ কৃষির আধুনিক প্রযুক্তি, কৃষি উপকরণ ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য একসাথে একমাত্র কৃষি মেলার মাধ্যমে দেখা সম্ভব। গ্রামের মতো শহরেও এ ধরনের মেলার আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ মেলায় এক নজরে নানা ধরনের ফসল দেখা সম্ভব হয়। মেলায় চারা, বীজ, সার, কৃষি প্রযুক্তি ইত্যাদি দেখানো ও বিক্রি করা হয়। মেলায় কৃষি বিষয়ক নানা লিফলেট, পুস্তিকা, বুলেটিন, পত্রিকা প্রদর্শিত হয় এবং বিনামূল্যে দর্শকদের দেওয়া হয়। এতে কৃষি কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও উপস্থিত দর্শকগণও কৃষি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হন।
২। রিনা বেগম তার কৃষি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য যাদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা পেতে পারেঃ অভিজ্ঞ কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কৃষি বিষয়ক তথ্য ও সেবা দিয়ে থাকেন।
৩। কৃষি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণায় যে যে প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রাখছেঃ বাংলাদেশের ১৬টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে। এছাড়াও প্রাইভেট কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে। কারিগরি বোর্ডের একাডেমিক অধীনে থেকে ইনস্টিটিউটগুলো চার বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা প্রদান করে থাকে। উচ্চতর কৃষি শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের পাঁচটি সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। দুটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি অনুষদ চালু আছে। বাংলাদেশে অনেকগুলো কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বেশিরভাগ গবেষণা প্রতিষ্ঠানই নির্দিষ্ট ফসলের উপর গবেষণা করে থাকে। যেমন- বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ধানের উন্নত জাত ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা করে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাট উন্নয়নের জন্য যাবতীয় গবেষণা করে। বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট ইক্ষু উন্নয়নের জন্য যাবতীয় গবেষণা করে থাকে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভিন্ন ফসলের উপর গবেষণা করে। এর ফলে কৃষকেরা উন্নতমানের বীজ, নতুন জাত, রোগ ও এর প্রতিকার সহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন। সকল কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে জনগণকে অবহিত করছে। কৃষি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ ও গভেষণা করতে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভূমিকা রাখতে পারে।
৪। একজন অভিজ্ঞ কৃষক রিনা বেগমকে যেভাবে সহায়তা করতে পারেনঃ অভিজ্ঞ কৃষক একজন স্থানীয় নেতা এবং একজন পরামর্শদাতা। তিনি স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন ও নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। এছাড়া তিনি গণমাধ্যম থেকে অনেক তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি স্থানীয় তথ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। অভিজ্ঞ কৃষকেরা কৃষি জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করেন। অতঃপর তিনি নিজ এলাকার কৃষকদের কৃষি বিষয়ে পরামর্শ দান করেন। কৃষকেরা ফসল নিয়ে নানা সমস্যায় ভোগেন। যেমন- ফসলের রোগ হওয়া, কীটপতঙ্গ আক্রমণ করা, বন্যা ও খরা দেখা দেওয়া ইত্যাদি। এসব প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করার জন্য প্রাথমিকভাবে কৃষকেরা অভিজ্ঞ কৃষকের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন। আর তিনিও আন্তরিকভাবে যতটুকু জানেন সে মোতাবেক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৫। একজন কৃষক ও একজন কৃষি বিজ্ঞানীকে আমি যে ভাবে আলাদা করবোঃ একজন কৃষক ও একজন কৃষি বিজ্ঞানী এক নয়। একজন কৃষক কেবল কৃষি কাজ করেন। কিন্তু তার ফসলের জন্য কোন উপাদান কি পরিমাণে লাগবে কিংবা সঠিক সময়ে ফসলের সঠিক যতœ ইত্যাদি সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে পারেন না। ফসলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কারো নিকট তাকে দ্বারস্থ হতে হয়।
পক্ষান্তরে, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যিনি গবেষণা করে নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন, তিনি কৃষি বিজ্ঞানী। তিনি একটি ফসল এর জীবনচক্র সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং তার নিকট কৃষি বিষয়ক নানা প্রকার তথ্য পুঞ্জিভূত থাকে। তারা নতুন ফসল ও প্রাণীর উন্নতজাত উৎপাদন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করে দেশের কল্যাণ সাধন করছেন। এভাবেই আমি একজন কৃষক ও একজন কৃষি বিজ্ঞানীকে আলাদা করবো।
Comments
Post a Comment